সময়ের অপেক্ষা
– সুজাতা দাস
এই যে অনিন্দ্য সুন্দর ঘন নীল অথবা শৈবাল রূপ জলরাশি এ’তো শুধু রূপসী নয়! সে’তো মহা জলধী, বৈভবে পরিপূর্ণ সাগর, যার ডাকে এখানে ছুটে ছুটে আসা এর অমোঘ ডাক শুনে বারে বারে বলতে বলতে এগিয়ে যেতে থাকলো শৈবাল জলরাশির দিকে দুই হাত ছড়িয়ে।
শৈবালের এগিয়ে যাওয়া দেখে আরতি চেঁচিয়ে বলতে থাকলো- আর যাবেন না শৈবালদা, এরপর জল অনেক গভীর ।
কিন্তু শৈবালকে আজ শৈল্পিকতায় ভর করেছে, সে যেন কোনও কথা কানে নিতে চাইছে না বা কানে যাচ্ছে না এমন ভাবেই চলতে থাকলো সকলের চিৎকারকে অমান্য করে।
হঠাৎ এক হ্যাঁচকা টান, উল্টো দিকে পড়তে পড়তে এক সুন্দরী মহিলার বাহুপাশে আবদ্ধ হয়ে চোখ পিটপিট করতে থাকলো সকলের শৈবালদা মানে শৈবাল চট্টরাজ।
কী ব্যাপার মরার আর জায়গা খুঁজে পাননি সোজা টিকিট কেটে পুরী ধামে চলে এসেছেন? বললেন এক মহিলা উচ্চস্বরে।
চমকিত শৈবাল বলে উঠলো, নন ন না মানে…..
বলতে বলতেই হঠাৎ এক বিরাট ঢেউ এসে দুজকেই ভাসিয়ে নিলো।
নিজেকে সোজা রাখতে না পেরে আবার ঐ মহিলার ঘাড়েই হুমড়ি খেয়ে পড়তে পড়তে শৈবালদা বলতে থাকলেন, সরি সরি ম্যাডাম..
কিন্তু প্রচণ্ড জলের ঢেউয়ে দুজনেই একসাথে প্রপাতধরনীতলে।
একটা সময় জলের ধাক্কায় নাকানিচোবানি খেয়ে পাড়ে এসে দাঁড়ালেন দুজনেই, ততক্ষণে ভদ্রমহিলার অবস্থাও শোচনীয়। মহিলার মুখের বচন আর জলের ধাক্কা সামলে শৈবালদার অবস্থাও দেখার মতো তখন।
কিন্তু দুই ধাক্কায় কাহিল হয়েও শৈবালদা খুব ম্লান হেসে অত্যন্ত বিনীত কণ্ঠে মহিলাকে বললেন, আসলে অতটা দূরে চলে গেছি আমিও বুঝতে পারিনি ম্যাডাম।
হঠাৎ মহিলা হাত বাড়িয়ে শৈবালের কান থেকে টান দিয়ে একটা তার খুলে আনলেন শৈবালের চোখের সামনে, আর কটমট করে তাকিয়ে বললেন, এটা কানে গুজলে আর শুনবেন কী ভাবে? আজকাল’যে কী’ফ্যাসান হয়েছে যত্তসব! বুড়ো মানুষেরাও বাদ যান’না বলতে বলতে এগিয়ে গেলেন রাস্তার দিকে।
এতক্ষণ আরতি ও আর সকলে দুর থেকে দেখছিল ব্যাপারটা, মহিলা চলে যেতেই আরতি এগিয়ে এসে বলল, কী’হতো বলুন তো শৈবালদা আমরা মাসিমাকে কী কৈফিয়ত দিতাম! কী’যে ছেলেমানুষি করেন কে’জানে? এবার চলুন ফেরা যাক, বলে হাঁটতে থাকলো আরতি পেছন দিকে না তাকিয়েই।
সকলেই কম’বেশি বলতে থাকলো শৈবালকে, সাথে আশেপাশের অনেকেই, জোর বেঁচে গেলেন দাদা ঐ মহিলার জন্য একটু ধন্যবাদ দেবেন তাকে।
শৈবাল কিন্তু সেই এক’রকম ভাবেই দাঁড়িয়ে রইলো, মহিলার কন্ঠস্বর এখনও তার কানে ভ্রমরের মতোই গুঞ্জন করছিল তখনও আর সাথে এক অদ্ভুত রোমাঞ্চ।
সংসারে মা ছাড়া আর দ্বিতীয় কোনও নারীকে কখনও আনার কথা চিন্তা করেননি শৈবাল কারণ সেই মেয়েটি মায়ের সাথে যদি মানিয়ে চলতে না পারেন, মাকে সে দুঃখ দিতে পারবে’না শেষ বয়সে। আবার হাতে ধরে নিয়ে আসা মেয়েটিকে দুঃখ দেবেন কীভাবে এটা ভাবতে ভাবতেই বিয়ে আর করা হয়ে উঠলো না মধ্য পঁয়তাল্লিশের শৈবালের।
ইন্ডিয়ান অয়েলে চাকরি করা এই মানুষটি শুধু নিরীহই না বাচ্চাদের ভীষণ ভালোবাসেন এবং ভীষণ কেয়ারিং, আর মানিয়ে নেওয়ার বা মানানোর ক্ষমতাও অপরিসীম। তাই প্রতি বছর এই পুরীতে বেড়ানোয় অফিস কোলিগদের সঙ্গী হন শৈবাল।
গ্রুপের বাচ্চা থেকে বড় সবাই শৈবালকে খুব ভালোবাসেন কারণ এই নির্ঝঞ্ঝাট মানুষটি সব বাচ্চাদের আগলে রাখেন সন্তানের মতো এই ঘোরার কটা দিন।
এহেন শৈবালদা হঠাৎ নিজেই এমন একটা কাজ করে বসবেন সেটা কেউই হয়তো ভাবতে পারেনি তাই সকলেই একটু একটু রাগ প্রকাশ করে ফেললেন। মাসিমাকে কী জবাব দিতেন ফিরে গিয়ে যদি কোনও অঘটন ঘটত এই কারণে!
অনেকটা সময় নিজের মনেই দাঁড়িয়ে রইলেন শৈবাল সমুদ্রের ধারে ভিজে জামা কাপড়ে, হঠাৎ সম্বিত ফিরলো একজনের কথায় দাদা এবার হোটেলে যান অনেকক্ষণ ভিজে কাপড়ে দাঁড়িয়ে আছেন ঠান্ডা লেগে যাবে।
একটু বোকা হেসে হ্যাঁ, যাই বলে হাঁটতে থাকলেন হোটেলের দিকে শৈবাল কিন্তু মন থেকে মহিলার ছোঁয়া আর কন্ঠস্বর মুছতে পারলেন’না কিছুতেই।
বারেবারেই অন্যমনস্ক হয়ে পড়ছেন শৈবাল আর খুঁজে চলেছেন ঐ মহিলাকে যার একটু স্পর্শ তাকে অনেক আনন্দ দিয়েছে।
সেইদিন বিকেল থেকেই খোঁজ শুরু করেছে শৈবাল অন্তত ধন্যবাদ তো দিতে হবে কারণ তিনি হয়তো বিবাহিতাও হতে পারেন।
এই ভাবেই খুঁজতে খুঁজতে একদিন মন্দিরের ভিরের ভিতর থেকে একটা চিৎকারের শব্দে চমকে উঠলেন শৈবাল।
এক মহিলা বলছেন, আপনি তখন থেকে আমাকে ঠেলে এগোনোর চেষ্টা চালিয়ে গেলেও, আমাকে সরিয়ে আপনি এগোবেন সেটা আমি হতে দেবো’না।
গলার আওয়াজ শুনেই চিনতে পারলেন শৈবালদা কারণ সেদিন এই মহিলা তাকে সারা জীবনের ঝাড় একসাথে ঝেড়েছিলেন, যদিও জলে বার বার পড়ে যাবার কারণে বেশিটাই শুনতে পাননি।
মন্দিরের একটা কোনায় দাঁড়িয়ে থাকলেন এই মনে করে দেখা যখন পেয়েছি আজ ধন্যবাদ দিয়েই ফিরবো, এই মনোভাব নিয়ে
অনেক কষ্ট করে মনকে শক্ত আর সাহস সঞ্চয় করে মহিলা বেরোনোর সাথে সাথে বললেন সেদিন আমাকে যে বিপদ থেকে আপনি উদ্ধার করে নিয়ে এসেছিলেন তার জন্য আপনাকে ধন্যবাদ ম্যাডাম।
আচমকা শৈবালের কথায় অবাক হয়ে মুখের দিকে তাকিয়ে, ভ্রূ’যুগল কুঁচকে বললেন, অঅ আপনি..ধন্যবাদ দেবার মতো এমন কোনও কাজ আমি করিনি। তবে দ্বিতীয়বারে এই কাজটি করার আগে দু’বার ভাববেন কারণ বারবার আমি বাঁচাতে আসবো’না।
-তা’তো ঠিকই, তা’তো ঠিকই ম্যাডাম- বললো শৈবাল।
-আপনি একা? মানে আপনার সাথে আর কেউ মানে আপনার স্বামীকে দেখছি না ম্যাডাম? বললো শৈবাল।
হাঁটতে হাঁটতেই পেছন ঘুরে ভদ্রমহিলা কটমট করে তাকিয়ে বললেন, কেন স্বামী ছাড়া মহিলারা চলতে পারেন’না আপনাকে এই কথাটা কে বললেন শৈবাল বাবু? আর তখন থেকে মানে মানে করছেন কেন প্রতিটি সেন্টেন্সের আগে! যত বাজে অভ্যাস।
নিজের নামটা মহিলার মুখে শুনে একটু অবাক হলেও আনন্দে ভাসলেন এই ভাবনায় যে মহিলা তার কথা মনে রেখেছেন।
মনে মনে আনন্দ পেলেও মুখে প্রকাশ না করে বললেন, না মানে একা তো কেউ আসেন না মানে বিবাহিত নারী’পুরুষই তো বেশি দেখি তাই আর কী, বললো শৈবাল।
এতো মানে মানে না করে আপনি বলুন তো আপনি স্ত্রীকে সঙ্গে আনেন নি কেন? হঠাৎ জিজ্ঞাসা মহিলাটির।
শৈবাল আমতা আমতা করে বললো, আসলে আমার স্ত্রী নেই।
-মরে বেঁচেছেন তাহলে, বললেন মহিলা।
-আরে না আমি বিয়েই করিনি। মানে সময় পাইনি আর কি..
এই ভাবেই শুরু হয়ে যখন কথোপকথন শেষ হলো ততক্ষণে শৈবাল জানতে পেরেছে মহিলার নাম শিবানী এবং সে এখনও অনূঢ়া।
অজস্র বাকবিতণ্ডার মাঝেও দুজনেই অনুভব করলেন কিছু ভালো গুণ দুজনেরই আছে সুতরাং আগামীতে আবার দেখা হবে এই প্রতিশ্রুতি নিয়ে আর দিয়ে ফিরে চললেন হোটেলের দিকে শৈবাল।
প্রথম প্রথম সকলেই এই অন্যমনস্কতাকে আগের দিনের সকালের ঘটনার কথাই ভাবিয়েছে, কিন্তু হঠাৎ হঠাৎ শৈবালদার অন্তর্ধান রহস্য সকলের কাছে পরিষ্কার না হওয়ায় সকলেই অবাক হলো বিশেষ করে আরতি।
কারণ একদিন আরতি দেখলো প্রতিদিনের রুটিনে বিঘ্ন ঘটেছে, শৈবালদা কারও দরজায় ঠক্ ঠক্ আওয়াজ করছেন না সকালের চা খাওয়ার আর সমুদ্র স্নানে যাবার জন্য।
তখনই ব্যাপার কী! দেখার জন্য সকলে শৈবালের ঘরের সামনে এসে দেখলো তালা দেওয়া, তাদের না জানিয়ে যাওয়ায় সকলেই অবাক হলো।
কোথায় গেল শৈবালদা কখনও তো এমন করেন না!
হয়তো সকলের কথায় দুঃখ পেয়েছেন, তাই কাউকে ডাকেননি এটা মনে করে আরতি তার ছেলে বর ও আর সকলেই সমুদ্রের দিকে রওনা দিল সমুদ্রের ধারেই আছেন মনে করে।
এর মধ্যে মৈত্রেয়ী আর মৈনাক এরা হ্যানিমুন করতে এসেছে তাই একটু দুরে দুরেই নিজেদের নিয়ে ব্যস্ত থাকে, আর সকলেই ওদের মতো করেই চলতে দেয়। কারণ ওরা সকলের থেকে অনেকটাই ছোট।
একদিন মৈনাক আর মৈত্রেয়ী সকালের বাসে পুরীর আসে পাশের সাইড সিন দেখতে গিয়ে কোনারকের সূর্য মন্দিরে শৈবালদাকে ঐ মহিলার সাথে দেখে অবাক হলো, শুধু তাই নয় দুজনের অন্তরঙ্গতা দেখে তাদের দুজনের চক্ষু চরকগাছে ওঠার অবস্থা। যদিও শৈবালদা আর ঐ মহিলা এতটাই নিজেদের নিয়ে মশগুল যে এঁদের দুজনকে খেয়ালই করলো না দুজনে। ওখান থেকেই আরতিকে ফোন করে জানিয়ে দিল মৈনাক সবকিছু ।
আরতি শুনতে শুনতে প্রথমে একটু অবাক হলেও মনে মনে খুশিই হলো এই সংবাদে কারণ সেও মনে প্রাণে চাইত শৈবালদার একটা সংসার হোক্, মাসিমা আর ক’দিন..তারপর কে দেখবে এই লোকটাকে স্বার্থের সংসারে সবাই স্বার্থে চলে।
শুধু মহিলা সম্বন্ধে একটু খোঁজ খবর নিতে হবে একটু ভালো করে, ভাবলো মনে মনে আরতি।
অনেক রাতে শৈবাল ফিরলে আরতি এলো শৈবালের দরজায়, ঠক্ ঠক্ শব্দ করতে লাগলো দরজায়।
আসছি, ভেতর থেকে আওয়াজ এলো এবং সাথে সাথেই দরজা খুলে গেল।
আরতিকে দরজায় দাঁড়িয়ে থাকতে দেখে একটু চমকালো শৈবাল, কারণ এই মেয়েটিকে যেমন সে শ্রদ্ধা করে তেমনই অনেক ভালোবাসে আর ভয়ও পায়। আরতির তাকানোতে একটা অদ্ভুত শক্তি আছে, ও তাকালে মনে হয় শৈবালের ভেতরটা পুরোটা দেখতে পাচ্ছে।
তাড়াতাড়ি চোখ নামিয়ে নিয়ে শৈবাল বললো, কিছু বলবি আরি?
তোমার সময় হবে একটু শৈবালদা? বললো আরতি।
একবার তাকিয়েই চোখ নামিয়ে নিয়ে শৈবাল বললো, আয় ভিতরে-
কোনো রকম ভনিতায় না গিয়ে আরতি বললো, তুমি খুশি তো দাদা?
চমকে তাকিয়ে মাথা নিচু করলো শৈবাল।
বারবার মাথা কেন নিচু করছো দাদা, আমি খুব খুশী তবে আমি এটাও চাই শেষে তুমি দুঃখ না’পাও তাই আমি একবার ঐ ভদ্রমহিলার সাথে কথা বলতে চাই দাদা তুমি যদি অনুমতি দাও।
-আমিই বলতাম তোকে আরি, কারণ একমাত্র তুইই আমার ভালো চাস এটা আমি জানি’রে আরি। কিন্তু তুই ব্যপারটা ভালো মতো নিবি কিনা ভাবছিলাম, তুই তো দেখেছিস শিবানীকে মা পছন্দ করবেন তো আরি?
বলে এক চোখ জিজ্ঞাসা নিয়ে তাকিয়ে থাকলো আরতির দিকে শৈবাল।
-আসলে বড্ড কটকট করে কথা বলে তবে মনটা ভালোরে আরি।
আরতি চমকে তাকালো শৈবালের দিকে তারপর একটু হেসে বললো, ওটা নিয়ে তুমি ভেব না দাদা আমি আছি তো বলতে বলতে উঠে দাঁড়ালো আরতি। বেরিয়ে যেতে যেতে বললো, মাসিমার দায়িত্ব আমার উপরেই ছাড়ো দাদা। তাহলে কাল বিকেলে উনাকে ডেকে নাও আমি কথা বলতে চাই ওনার সাথে কারণ তুমি কষ্ট পাও, এটা আমি দেখতে পারবো না -বলে বেড়িয়ে এলো আরতি শৈবালের ঘর থেকে।
আজ ফিরে চলেছে সকলে পুরি থেকে সকলেরই মন খুব খারাপ কারণ আবার হয়তো এক বছর বা তারও পরে আসবে সময় সুযোগ মতো, গাড়িতে উঠে যার যার মতো খেয়ে নিল তারপর বিছানা পেতে নিয়ে নিজের নিজের মতো সকলেই শুয়ে পড়লো।
শিবানীদি এসেছিল সকলকে সী’অফ করতে কারণ তার টিকিট দুদিন পরের।
সবাই গাড়িতে উঠে এলে আরতি দেখেছিল শিবানীদির মন খারাপের মুখটা।
সবাই ঘুমিয়ে পরলেও শুধু আরতি জেগে রইলো কারণ, সে কিছুতেই ট্রেনে ঘুমাতে পারে না তবে আজ ঘুম না আসার জন্য তার কোনও খেদ নেই কারণ প্রথম দিনের ব্যবহারে একটু হলেও ভয় ছিল আরতির, মহিলা যেভাবে কথা শোনাচ্ছিলেন শৈবালদাকে তাই দেখে মনে হয়েছিল মহিলাটি জাঁদরেল। কিন্তু কাল শিবানীদির ব্যবহারে ও আন্তরিকতায় আরতি মুগ্ধ।
পেশায় উকিল হওয়ায় তার মধ্যে এই কঠোরতা চলে এসেছে সেটা শুধু বাইরের খোলসে ভেতরে নরম এক মাতৃভাব বর্তমান।
ছোটবেলায় বাবা মারা যাওয়ার পর ভাইবোনদের মানুষ করে বিয়ে দিয়ে তাদের সংসারে প্রতিষ্ঠিত করতে গিয়ে নিজের জীবনের অনেকটা সময় চলে গেছে তারপর মায়ের দেখাশোনা বিয়ের কথা আর ভাবতে পারে নি।
এখানে এসে যে এরকম একটা সম্পর্কে জড়িয়ে যাবে সেটা দু’দিন আগেও চিন্তা করেনি আসলে মা মারা যাবার পর প্রতি বছরই আসে শিবানীদি পুরী কোনও দিন তো দেখা হয়নি তাদের সাথে আসলে সময়, সময় না হলে কিছুই হবে না।
আজ মনটা খুব ভালো হয়ে আছে.. শৈবালদা এখান থেকেই দেরি হলেও নিজের জীবনসঙ্গী খুঁজে পেয়েছে।
চিন্তার মাঝেই ট্রেনের থামা আর চলার শব্দের সাথে এক স্টেশন থেকে আর এক স্টেশন পেরোনোর খবর জানান দিয়ে যাচ্ছিল জেগে থাকা আরতিকে।
হঠাৎ শোয়া অবস্থাতেই দুই হাত জোড় করে কপালে ঠেকালো জগন্নাথের উদ্দেশ্যে তারপর নিশ্চিন্ত মনে পাশ ফিরে শুয়ে পড়লো আরতি।
আর অদ্ভুত ভাবে কখন যেন তার এতোদিনের পুরোনো অভ্যাস পাল্টে ফেলে নিশ্চিন্তে ঘুমিয়ে পড়লো আরতি।